লেখালেখি করবার কুপ্রভাব
![]() |
লেখালেখি করবার কুপ্রভাব
১.,একসময় লিখতে লিখতে খুব ডিপ্রেসড হয়ে যাবেন।
২.মনোযোগ হ্রাস পাবে। অর্থাৎ আপনি অন্যমনস্ক হয়ে যাবেন খুব সহযে।
৩. অযথা অনেক চিন্তা করে ক্লান্ত হয়ে যাবেন। দিনশেষে আপনি অলসদের কাতারেই দাঁড়াবেন।
৪. অযথা অনেকের হিংসার কারন হবেন। তাদের দ্বারা ইমোশনাল ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
৫.মনের অজান্তেই সব ছেড়েছুড়ে চলে যেতে ইচ্ছা করবে। এবং অনেকসময় লেখকরা তা করেও থাকেন । এক্সট্রিম লেভেলে। ম্যাক্সিমাম লেখকদের জীবনী পড়ে যা বুঝলাম , হয় তারা নির্জন কোথাও চলে গেছে, চাকরি ছেড়ে দিয়েছে, কেউ কেউ একাডেমিক পড়াশুনা শেষ করতে পারে নাই , কেউ সংসার ছেড়ে দিয়েছে নাহয় দফায় দফায় সংসার বদলেছে ঠিক কর্মসংস্থানের মত। দেশ বদলেছে। একা হয়েছে। একা থাকতে চেয়েছে।বদল আর বদলের জীবন থেকে এত এত নেগেটিভিটি উদ্দিপক হয়ে লেখা আকারে বেরিয়েছে যা আমরা এত তৃপ্তি সহকারে পড়ি। যাকে কিনা আমরা অভিজ্ঞতা লব্ধ জ্ঞান বলি।
৬. বাস্তবতা আর কল্পনার মাধ্যমে এমন এমন সৃষ্টি তৈরি করে যা আদতে তাকেই নিঃশেষ করতে থাকে।
৭. একজন লেখক ন্যাচারাল ইমপ্যাথ হয়। সে সবার দুঃখ কষ্ট নিজের দিকে টেনে নেয় এবং খুব দুঃখিত হয়। খুব হতাশ হয় সমাজের দুরবস্থা দেখে আর তার কলম থেকে বেরিয়ে আসে একের পরেক লেখা যা তার অতিরিক্ত চিন্তার ফসল কিন্তু দিনশেষে তার এই অতিরিক্তমাত্রায় চিন্তাই তাকে খালি করে , দুরত্ব তৈরি করে তাদের সাথেই যাদের জন্য এসব চিন্তাধারা অর্থাৎ সমাজ থেকে সে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কারন ততদিনে হয় তাকে সবাই আলাদা ভেবে বসে নতুবা সেই আলাদা হয়ে যায় নিজস্ব চিন্তাভাবনার ধোকায় পড়ে অথবা ঐকান্তিক চিন্তাভাবনার সাথে বাকি আট দশজনের এত অমিল দেখে সে নিজের মত মানুষ খুঁজে পায় না এবং একসময় হতাশ ক্লান্ত পরিশ্রান্ত হয়ে সে খোঁজাখুঁজি বন্ধ করে।ততদিনে সে আরোও নিবিড়ভাবে আত্মমগ্ন হয় আত্মার সন্ধানে। আত্মকে খুঁজে সে। আর পরনির্ভরশীল হয় না। চিন্তাভাবনায় আরও ডুবে যায়। লোকে ভাবে লেখক পাগল হয়ে গেছে নাহয় লাপাত্তা হয়ে গেছে নাহয় মারা গেছে।
৮. প্রত্যেকটা লেখকই আবনর্মাল থাকে। এরা নর্মাল না। এরা যদি সাধারণ হতো তবে সাধারণ ভাবেই চিন্তা করতে পারত। সাধারণ জীবনযাপন করত। পরিবর্তন নিয়ে ভাবত না। আর ভুলে যাওয়া যাবে না তারা তাদের এই সৃষ্টিশীলতার উন্মাদনা আর ঐকান্তিক চিন্তাভাবনা এবং আবেগ নিয়ন্ত্রন করতে পারার অক্ষমতার জন্যই তারা লিখতে পারে। যারা নিজেদের ভাব,আবেগকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে তারা কখনও লিখতে পারে না। তারা হলো অন্য আট দশজনের মত। গতানুগতিক চিন্তাভাবনা করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।
৯. সর্বশেষ , এই অনিয়ন্ত্রনই লেখকের জীবনের কাল হয়ে দাঁড়ায়। যেটাকে নিয়ন্ত্রন করা খুব কঠিন। আর যখনই কোনো সৃষ্টিশীল মানুষ নিজেকে নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করে তখনি স্তিমিত হয়ে যায় তার লেখনি এবং চিন্তাচেতনার শক্তি। কারন তখন সে আর গভীরভাবে ভাবে না। তখন সে সমাজের চোখে নিজেকে দেখা শুরু করে এবং নিজেকে আর খুঁজে না। অন্যরা যা করে সেও তাই করা শুরু করে। আর নিজেকে ভাল রাখতে গিয়ে ধ্বংস করে তার সৃষ্টিশীলতাকে যেমন করে তার সৃষ্টিশীলতা ধ্বংস করে তাকে।
Comments