শাসক আর শোষিতের সম্পর্ক

 

শাসক আর শোষিত একই সমান্তরালে অবস্থিত। 

ফারহিন ভূঁইয়া ন্যান্সি। 


শাসক আর শোষিতের মধ্যে সম্পর্কে শাসক ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যায় আর শোষিত ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে যায় যদি সে একবার সে ধারাটিতে সফলভাবে টিকে যেতে পারে ত! কারন, ততদিনে শাসক শোষণ করবার সবকটি পন্থা অবলম্বন করে ফেলে, সবভাবে সে শোষিতকে অত্যাচারিত করতে থাকে। এর ফলে, তার কাছে আর নতুন কোনো পদ্ধতি বা কারণ ও থাকে না বঞ্চিত করার। এতে, শোষিত যদি সবকটা বাধা বিপত্তি আর পদ্ধতির মুখোমুখি হয়েও উতরে যেতে পারে এবং স্থিতিশীলতার গুনে টিকে থাকতে পারে, তবে শাসক এবার শোষিতদের ভয় পাওয়া শুরু করে। তখন, শাসক আবারও সেই পুরোনো ভয়ের অস্ত্র উচিয়ে ধরে, পুরোনো কায়দাগুলোর পুনরাবৃত্তি করে। কিন্তু, তখন আর লাভ হয় না। কারন, ততদিনে শোষিত ভয় পাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। সে এসবে অভ্যস্ত হয়ে গেছে আর জানে শোষণের মাত্রা বাড়লে কি করতে হবে, কিভাবে পার পেতে হবে এবং কতটা সময় পরে সে ঠিক হতে পারবে। তার আর ভয় লাগে না। কোনো আশা নেই, হতাশা নেই, কোনো আবেগ তার মধ্যে কাজ করে না যা কিনা শাসক খুব আগ্রহ ভরে শোষিতের মধতে দেখতে চাইত। সে ভয়, সে নির্ভরতা, সে অসহায়ত্ব সে শোষিতের মধ্যে আর দেখতে পার না। যার জন্য বিচলিত হয়ে পড়ে শাসক আর একটা সময়ে সে দুর্বল হতে আরো দুর্বলতরো হয়ে পড়ে। শোষিতের উপর তার কোনো নিয়ন্ত্রণ, কোনো ক্ষমতা থাকে না। আর তার নিজের মধ্যেও কোনো উৎসাহ কাজ করে না শোষণ করবার সবকটি পথ সে বেছে নিয়েছে। শোষিতেরও হারাবার কিছু নাই, ভয়ও নাই। 

ঠিক এই সুযোগেই শোষিত ক্ষমতার দন্ডটি তার হাতে তুলে নেয়। শাসককে সে ক্ষমতাচ্যুত করে। দ্রোহ করে৷ অপদস্থ করে। এবার, শাসকের ভূমিকায় আসে শোষিত আর শাসক নেমে আসে শোষিতের ভূমিকায়। আর, এভাবেই শাসক-শোষিতের সম্পর্ক ধাবমান হতে থাকে ধ্রুপদী নিয়মে। স্বেচ্চাচারের কোনো নিয়ম থাকে না। শাসক যে পথ দেখায় শোষিতকে, শোষিত সে পথের গুরু বনে যায়। সত্যি, শাসক আর শোষিতের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এরা, একে অপরকে প্রভাবিত করে। সময়ের সাথে এরা শুধু জায়গা বদল করে। অথবা, ভূমিকার রদবদল হয় শুধু। কিন্তু, শাসক-শাসিতের সম্পর্ক ডাইনামিকালি চলতে থাকে দ্রুব গতিতে সমান ত্বরণে। শাসক হয়ে যায় শোষিত, শোষিত বনে যায় শাসক ধ্রুব নিয়মে! শাসক আর শাসিত আসলে একই সমান্তরালে অবস্থিত।

Comments

Popular posts from this blog

শিল্পীর মৃত্যু

Alienation from the Roots, DNA race and Divine Masculinity-femininity: Super-ego and evolution of Moral Justice

Deconstructed love