বালি
কিছুই এখন এখানে আর বাকি নেই,
যা কিছু ছিল সব ধুয়ে গেছে তুষার ঝড়ে,
যা কিছু অবশিষ্ট রয়েছে- তা ধ্বংসাবশেষ,
মাকড়শার জালের মত ক্ষীণ, সুক্ষ্ম, অনভিজ্ঞ,
যা কিছু আছে তোমার আর আমার মধ্যে তা কেবল অনীহা,
আর রয়েছে এক মহাকাশ সমান দূরত্ব যা আর কখনও ঘুচবে না।
মহাকাশে নতুন নক্ষত্রদের উত্থানের জন্যে হলেও দরকার হয় শুন্যস্থানের ,
নবযাত্রা আরম্ভ করতে হলেও পুরোনো পথকে জানাতে হয় বিদায়,
বিভক্তির বিভবকে জানাতে হয় পরাজয়ের সম্ভাষণ,
মন্বন্তরের দ্বৈরতকে বলতে হয়-
অচিন তুমি আর অচেনা তোমার গমনের পথ,
চিরবিদায় হে সন্দিগ্ধ বিকাল, বিরাগ ভাজন অপারগ সন্ধ্যা,
এবং ভীত-সন্ত্রস্ত বিভা।
মাকড়শাদের সব সমীকরণ মিলিয়ে যায় খুব সুন্দরভাবে বৃষ্টিস্নাত উপেক্ষায়,
অবসন্ন নিরবতার নিরালায়, ফাঁকা কুঠরীর জনবিচ্ছিন্নতায়,
জ্যামিতিক জালের হিসেব ফুরোয় এক ঝটিকায়,
প্রহরের সতেজ আলোয় ছিন্ন হয় বিস্তার,
খোলস লেগে থাকে অস্তিত্বহীন শরীরে,
অবয়বহীন অবয়ব যে,
মুখহীন একটা মুখ,
শব্দহীন যে শব্দের বহর,
কথাহীন যেসব কথাবার্তা- রয় অনুচ্চারিত এবং
উচ্চারিত যেসব অর্থহীন কথা লুকায় সাজের আবেগ,
আড়ালে অন্তরালে ঠিক ঐ খোলসের মত পড়ে থাকে প্রেম
অবলীলায় বড় অবহেলায়!
অবেলায় যার সঙ্গে বেধেছিল প্রাণের ঢোর,
কাঠঠোকরার ঠুনকো ঠোকরে ভেঙ্গে হয় গুড়োবালি মেহগনির বোধ।
বাধাহীন বাধা যে,
খোলা চুলে হাওয়া লাগায় যা,
বাধভাঙ্গা জোয়ারও একদিন হার মানে,
আছ্ড়ে পড়া যার স্বভাব- স্থির সমুদ্রতটের ভূমিরূপ কত দফায় পালটায়
তার খবর কি রেখেছে কোনো কোপার্নিকাস?
বালির ঘর বালিতেই মিলায়,
পিপড়াদের বহর লাশ বয়ে নিয়ে যায়- সে বালির ভেতর।
ভুলে গেছি, ভুলে যাব ধীরে ধীরে- নেই আর কোনো অবকাশ।
ঝড় নাহয় বুঝল না তার দায়, প্রকৃতি হয়ে আমি মাথা পেতে নিলাম সব,
জান্তব বিবেকের হোক অবসান,
বিষন্ন, জরাগ্রস্ত, উদ্ধ্বত অস্তিত্বের বিনাশ হোক- সে খুব চেনা অচিন তোমার ভেতর।
কিছুই কখনও পরিবর্তিত হয় না,
পরিবর্তিত হয় না স্বরূপ।
©® ফারহীন ভূঁইয়া ন্যান্সি
Comments