অকেজো হার্ট
আমি যখন থেকে বুঝতে পারি আমার হার্ট দুর্বল তখন থেকেই আমি একটু একটু করে দুনিয়াদারি থেকে সরে আসতে শুরু করি কিন্তু দুনিয়া আমাকে ছাড়ে না। কি আর করা! সার্ভাইব করতে হবে ত! টিকে থাকার এই লড়াইয়ে একেবারে মনের জোরেই বলতে গেলে সব করতে থাকি। বুঁনতে থাকি একের পরেক মনের কথা কলমের কালিতে। আমি যখন অতিরিক্ত ইমোশনাল স্ট্রেসের জন্যে ঘুমাতে পারতাম না, মাথার যন্ত্রণায় হাঁসফাঁস করতাম, বুকের বা পাশে চিন চিন ব্যথায় দম বন্ধ বন্ধ লাগত, যখন সারারাত ঘুমাতে পারতাম না নানাবিধ চিন্তাভাবনায়, তখন কলম ধরি। খুব ফ্যান্সিভাবে বলে ফেললাম কলম ধরি। আসলেতো, মোবাইলের স্ক্রিনে, ল্যাপটপের স্ক্রিনে টাইপ করতে থাকি। মনের ব্যথা, ক্লান্তি, রিয়ালাইজেশন, ফিলোসোফি, রিফ্লেকশুন্স, অবজার্বেশন সব আমার লেখায়- কবিতাগুলোতে ফুটিয়ে তুলি আর সেই সাথে একটু একটু করে নিজেকে হারাতে থাকি। হতাশায়, শুণ্যতা, বিচ্ছিন্নতায় ভুগে ভুগে আরো আইসোলেটেড হতে থাকি আর একাই সাফার করতে থাকি। সেজন্যেই সম্ভবত হয়ত আমার প্রথম ম্যানুস্ক্রিপ্টের নাম দিয়েছিলাম - শিল্পীর মৃত্য। প্রত্যেকটা শিল্প ত আসলে শিল্পীর মরণই ত!
আমি জানি আমার একেকটা পার্ট আমি দিয়ে দিচ্ছি আমার শিল্পে, চিন্তায়, গভীরতায়, একাগ্রতায়- ফলাফল হার্ট ডিজিস, উচ্চ রক্তচাপ, হঠাৎ মৃত্যুকে আমি ভয় পাই না কারন প্রতিদিনই আমি নীরব মৃত্যুর শিকার। যদিও নিজের দুর্বল হৃদপিণ্ডকে ভালো রাখার জন্যে বেশ ভালো একটা পদক্ষেপ নেই। সমস্ত নেগেটিভিটি আর স্ট্রেস থেকে আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে নেই। দীর্ঘদিন প্রায় ১-১.৫ লেখালেখি বন্ধ রাখি। সব ইমোশনকে সাপ্রেস করতে থাকি। আর সেইসাথে জীবন থেকে বাদ দিতে থাকি সেসব মানুষকে যাদের জন্যে এত ক্ষয়। নীরব মৃত্যু- ইমোশনাল ডেথ! টক্সিক মানুষদের আনাগোনা জীবন থেকে বন্ধ করে দিলে কি হবে তাদের দেয়া সেসব কষ্টের স্মৃতি কি ভোলা যায়?! যাই হোক, এ এক অদৃশ্য লড়াই। যারা লড়ে শুধু তারা জানে। প্রতিদিন স্মৃতির কবরে কত আর্তনাদ আমরা শুনতে পাই। প্রতিদিন তিলতিল করে আমরা মরে যাই। আবার, জেগে উঠি জীবনের জন্যে। ঐযে বেঁচে থাকতে হবে। কাজ করতে হবে।
সম্ভবত এই জন্যেই হয়তবা আমার বেশিরভাগ কবিতাগুলো নীরব মৃত্যুর সাক্ষ্য বহন করে। এরূপ, সাইল্যান্ট ডেথের থিমে নির্মিত। প্রতিদিনই ত আমরা মারা যাই। আর, সবার সামনে শুধু বেঁচে থাকার অভিনয় করে যাই।
শিল্পীর মৃত্যু কবিতার সংকলনে এজন্যে প্রারম্ভিক কবিতাটাই দিয়েছি এ নামীয় কবিতা। নিচে, কবিতাটি দেয়া হইল।
শিল্পীর মৃত্যু
এবং কেউ দেখল না একজন শিল্পীর অকাল মৃত্যু!
প্রতিদিন শিল্পী হৃদপিন্ডে চাপ দিয়ে দিয়ে,
রক্তের ওঠানামায়
তৈরি করতে থাকল শিল্প!
রোজ বেখায়ালে সময় যাপনে আর কিছু না করে,
একাকিত্বে যে রচিল শিল্পঃ কোনো সঙ্গ বিহনে,
তেমন শিল্পের কদর শিল্পী নিজেও কখনও বুঝে নি,
করে নি যতন সজিব থাকতে।
এখন শিল্পী রোজ ধুঁকে ধুঁকে মরে,
ভীষণ অসুখেঃ শ্বাসকষ্টে।
বুকভরা উত্তাপ; চোখভরা জলের ছাপ ঢেলে দিল
সব জীবন্ত শিল্পে অথবা শিল্পকে প্রাণ দিতে।
শহরে প্রচারিত হলো-
শিল্পী তার অবশিষ্ট প্রাণ ঢেলে দিল তার রচিত শিল্পে।
এখন, শিল্পীর প্রয়োজন নিরর্থক বড়,
শিল্পগুলো কথা বলে।
©® ফারহীন আক্তার ভুঁইয়া (ন্যান্সি)। সময়কাল-২০২১। রোকেয়া হল, ঢাবি।
হ্যা৷ ঠিক তাই। শুধু শিল্পী নয়, মানুষের প্রয়োজনই বড় নিরর্থক। তার শিল্পগুলো বা কাজগুলোই হয়তবা তার কথা বলে।
Comments