মায়ার উৎসের সাথে কর্মসম্পাদন এর সম্পর্ক কি?


 মায়ার উৎপত্তিস্থল থেকে কখনও মায়ার পরিমাপ করা যায় না। যারা করেন তারা শুধু উৎসকে চিনেন, নিজেদের সুবিধার্থে সুবিধাজনক উৎস খুঁজে নেন যেন মায়ার বদৌলতে তারা দুনিয়াবি দেনদরবার করতে পারেন। কারন, দুনিয়াবি উসিলায় মায়া মহব্বত দিয়ে সুবিধা আদায় করা যায় বা লাভ লুফে নেওয়া যায়, অবস্তুগত সম্পর্ক বলতে এখানে কিছুই থাকে না, যা থাকে তা হল, ভোগ বিলাসে মত্ত জড়তা! বস্তুগত চিন্তনে মগ্ন আত্মা! 

এই জন্য মায়ার উৎস যাচাই করলে মায়ার গড়পড়তা কোথায় গিয়ে ঠেকবে বুঝা যায়। কিন্তু, আবার মায়ার উৎস কিন্তু বিভিন্ন ধরণের হতে পারে- যেমন কাজের সূত্রে মায়া, সমমনা হবার ক্ষেত্রে চিন্তন প্রক্রিয়ায় ঐক্যবদ্ধ হবার ফলে মায়া, জন্মসূত্রে তৈরি মায়া, চুক্তিবদ্ধ সময়ে বসবাসের মায়া অথবা শুধুই একসাথে থাকার জন্যে গড়ে উঠা মায়া, যদিও কেউ চুক্তি অথবা পারস্পরিক কনসেন্ট বা লাভ ছাড়া, অথবা মিউচুয়াল বুঝাপড়া ছাড়া একসাথে বসবাস করে না! 

তো, এই যে উৎস যাই হোক না কেন মায়ার বন্ধন গড়ে ওঠে একেকভাবে। তবে তা যদি পরিমাপ করতে হয় অথবা এর গভীরতা মাপা হয়; সেক্ষেত্রে কার্যবিধি দেখতে হবে। উৎস যাই হোক না কেন মায়ার জন্য কেউ কতটা মায়াবী কাজ করছে অথবা কতটা কর্মে প্রকাশ করছে তাই মুখ্য! এক্ষেত্রে, অবস্তুগত মায়ার বস্তুগত রুপই বোধ হয় বেশি বুঝা যায় পরিমাপ কাঠিতে নাহয় শুধু অনুভূতির ধোপে টেকে না মায়ার সম্পর্ক! অনুভুতিও যে প্রকাশ করতে হয় এবং তা করতে হয় অত্যন্ত সুচারুভাবে! ঠিক যেন তা একটি শিল্প! 

এক্ষেত্রে, দেখা যেতে পারে, মায়ার গড়পড়তা কিভাবে বিস্তার লাভ করছে, ঠিক কি ফলাফল নিয়ে আসছে, কেমন বাঁক নিচ্ছে আর বক্ররেখায় চলার সময় কতটুকু সরল থাকছে! কোন গতিবেগে কোথায় ধাবিত হয়ে কোন গন্তব্যে পৌছাচ্ছে- অধিকাংশ মায়া যে সুফল বয়ে আনে তা নয়, কারুর কারুর ক্ষেত্রে তা বিক্ষিপ্ত পথে নিয়ে যেতে পারে! কখনও কখনও তা লক্ষ্যচ্যুত হয়ে যেতে পারে! অথবা, লক্ষ্যে পৌছে ঠিক মায়া না হয়ে অন্যকিছু হয়ে যেতে পারে-- অভ্যস্ততা, প্রয়োজন অথবা শুধুই কালক্ষেপন! ধনতান্ত্রিক সমাজে আবেগের দাফন হচ্ছে প্রতিনিয়ত! রোজ একটি একটি কবর খুঁড়া হয় ভালবাসার।লোকদেখানো মায়া বলেই তা আত্মতুষ্টির খোঁরাক যোগাতে পারে না কখনও! 

তবে যাই হোক না কেন প্রয়োজনটা যদি হয় অবস্তুগত সত্ত্বার সন্তুষ্টির জন্যে তা বৃহত্তর লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যায় মানুষকে- অন্তিম গন্তব্যে- যেখানে মানুষ নির্বাণ লাভ করে-- যেখানে সমাদৃত হয় সকল বন্ধন- সকল সুখ- শান্তির তরে!


লেখিকাঃ ফারহীন ন্যান্সি।

সত্ত্বঃ লেখিকা। 

সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। 


Comments

ধনতান্ত্রিক জগতে অবস্তুগত মায়া বা আবেগের সমাহিত হচ্ছে। যা আছে বা যা চলছে তা সবই মনে হচ্ছে মরীচিকা, লোকদেখানো ধান্দা।
ধনতান্ত্রিক সমাজে আবেগের দাফন হচ্ছে প্রতিনিয়ত! রোজ একটি একটি কবর খুঁড়া হয় ভালবাসার।লোকদেখানো মায়া বলেই তা আত্মতুষ্টির খোঁরাক যোগাতে পারে না কখনও!

Popular posts from this blog

July Revolution and Gen-Z’s March to mass political awareness: A generation’s evolution from apolitical to political entities.

Deconstructed love

The fate of the mountain and the fountain